আগামী সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অস্পষ্ট বলে মনে করছে বিএনপি। একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না থাকায় হতাশও হয়েছে দলটি।
আজ (বৃহস্পতিবার) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হতাশার কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ ডিসেম্বর রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করেন। সেই সভায় গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপদেষ্টার ভাষণের যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়।
ড. ইউনূসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সভা মনে করে, তার বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয়নি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট। নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ নেই। অথচ তার প্রেস সচিব বলেন যে, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা পরস্পরবিরোধী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিয়ে দেবে। সেটা তার বক্তব্যে নেই। এটা আমাদের হতাশ করেছে। আবার তার প্রেস সচিব যা বললেন, সেটা সাংঘর্ষিক। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ২৫ অথবা ২৬ সালের শুরুতে নির্বাচন হবে। আর প্রেস সচিব বলেছেন ’২৬ সালের জুনে নির্বাচন হবে। যার কারণে আমরা বুঝতে পারছি না যে, কোনটা সঠিক।
এই ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে গেছে, তাই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করে।
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন বিএনপি।