বাজারে কাঁচা মরিচসহ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। সব ধরনের চাল কিনতেও ৩-৮ টাকা পর্যন্ত বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং ডিমের।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, কৃষি মার্কেট ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
বিক্রেতারা বলছেন, গত এক মাস ধরে আন্দোলন, কারফিউ আর সরকার পতনকে ঘিরে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বারবার ওঠানামা করেছে। কিন্তু বর্তমানে পণ্যের দামের লাগামহীন অবস্থা কেটে গেছে। বেশিরভাগ পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা রয়েছে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কিছুটা বাড়তির দিকে।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ২০০-২৫০ টাকায়। তবে সেই দাম আবার বেড়েছে; বাজারভেদে ৩৫০-৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে পণ্যটি। বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ দামে স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজ ও আলুর দাম। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখনও ১১০-১২০ টাকা ও আলু ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা আর লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বেগুন ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা ও বরবটি ১০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
খুচরায় বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সব ধরনের চালের দাম ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং প্রতি কেজিতে তিন থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে পাইজাম চাল কেজিতে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ টাকা। মোটা চাল (স্বর্ণা) পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। চিকন চাল (২৯) গত সপ্তাহে ৫২ টাকায় বিক্রি হলেও কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, অস্থিরতার কারণে চালের দাম বেড়েছিল জুলাই মাসেই। এখনও সেই অবস্থাতেই আছে। আড়তদারদের কাছ থেকে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে; যে কারণে খুচরায় দাম বাড়তি।
এদিকে, মুরগির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ২৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। ডজনে ৫ টাকা দাম কমে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়।
গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে মাছের বাজার। প্রতি কেজি রুই ৩৪০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া, পাবদা ও শিং মাছ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে সদাই কিনতে আসা মোহায়মিনুল হক বলেন, শুনেছি শিক্ষার্থীরা বাজারে বাজারে মনিটরিং করছে। রাস্তায় চাঁদাবাজি কমার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাজারে তো বাস্তব চিত্র ভিন্ন। বর্তমান সরকারকে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে। সিন্ডিকেটগুলো নতুন করে জেঁকে বসার আগেই ভেঙ্গে দিতে পারলে বাজারে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন বেসরকারি এ চাকরিজীবী।