টানা বেশ কিছুদিন ধরে চলমান তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমে ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানে চলতি মে মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। হিটস্ট্রোক ও গরমজনিত অসুস্থতায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
বৃহস্পতিবার যেদিন এই সংবাদটি প্রকাশিত হয় বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে, সেদিন রাজস্থানের বারমার শহরের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল রেকর্ড ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো— তাদের সবার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছেন তারা। কর্মকর্তাদের মতে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই যে গরমের কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর গ্রীষ্মের শুরু থেকে ব্যাপক তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে রাজধানী নয়াদিল্লিসহ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে। গত বেশ কিছুদিন ধরে নয়াদিল্লির তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।
এই গরমের মধ্যেই দেশজুড়ে চলছে ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। গতকাল বৃহস্পতিবার যেদিন নয়াদিল্লিতে ভোটগ্রহণ চলছিল, সেদিন রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গ্রীষ্মকালে, বিশেষ করে মে-জুন মাসে ভারতে দৈনিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কিছু কম-বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু চলতি বছর মে মাস শুরুর আগে থেকেই দেশটির অনেক এলাকায় দৈনিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় বিরতিহীনভাবে গত এক মাস ধরে বিভিন্ন রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এ বছর বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম।
তবে দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র খানিকটা আলাদা। উত্তর,পূর্ব ও পশ্চিম ভারতে যখন তাপপ্রবাহ চলছে, সে সময় অতিবর্ষণে বিপর্যস্ত হচ্ছে দেশটির সর্বদক্ষিণের রাজ্য কেরালা। রাজ্যটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বিগত অন্যান্য বছরের এপ্রিল-মে মাস যত বৃষ্টিপাত ঘটে, তার তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল-মে’তে বৃষ্টি হয়েছে অন্তত ১৮ শতাংশ বেশি। অতিবর্ষণের কারণে রাজ্যের অনেক এলাকায় ফ্লাইট চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।