ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে উত্তর আমেরিকার সামাজিক মোর্চা ‘একাত্তরের প্রহরী’। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের পক্ষে বিবৃতি দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পী, সংগঠক, অধ্যাপক, আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টসহ ৪৪ জন প্রবাসী। বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমিক আপামর জনতার জন্য ছিল আরেকটি ‘শোকাবহ কালো দিন’।
বিবৃতিদাতারা বলেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবে জড়িত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অসংখ্য স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে দ্বিতীয় বারের মতো আক্রমণ করা হয়েছে। এদিন অগ্নিদগ্ধ এই বাড়িটির অবশিষ্ট অংশও ধ্বংস হয়ে গেছে। ‘একই ধারায় বাংলাদেশের সব খানেই বঙ্গবন্ধুর সব স্মৃতিস্তম্ভ, ফলক ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারীদের বাড়িঘরও ধ্বংস করা হয়েছে’, বলা হয় বিবৃতিতে।
এই প্রবাসীরা বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভেঙে ফেলার দৃশ্য যখন সরাসরি বাংলাদেশের অনলাইনে প্রচার করা হচ্ছিল, সারা দেশের এবং বহির্বিশ্বের অসংখ্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে আমরা নিউ ইয়র্কের একাত্তরের প্রহরী গভীর বেদনা ও পরিতাপের সঙ্গে তা প্রত্যক্ষ করেছি। বিষয়টিকে আমাদের দেশের অস্তিত্বের জন্য একটি অশনি সংকেত বলে মনে হয়েছে। এই ঘটনাটি পুরো বাংলাদেশকে একাত্তরের সেই দুর্বিষহ যুদ্ধের দিনে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে।
একাত্তরে যে পরিস্থিতিতে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল মানুষ প্রাণপণ যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিল, দেশে এখন তেমনই একটি পরিস্থিতি বিরাজমান উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীসহ সব সচেতন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
একাত্তরের প্রহরীর পক্ষে বিবৃতিদাতারা হলেন, ড. নুরুন নবী (মুক্তিযোদ্ধা), বেলাল বেগ (সমাজ চিন্তক), ড. জিনাত নবী (মুক্তিযোদ্ধা), তাজুল ইমাম (মুক্তিযোদ্ধা), ড. হাসান মামুন (অধ্যাপক), ড. নাহিদ বানু (বিজ্ঞানী), ড. দিলিপ নাথ (লেখক ও মূলধারার রাজনীতিবিদ), ড. আবু নাসের রাজীব, ইঞ্জিনিয়ার রানা হাসান মাহমুদ, রাফায়েত চৌধুরী (সংগঠক), ড. দেলোয়ার আরিফ (অধ্যাপক), ড. নীরু কামরুন নাহার (অধ্যাপক), ফকির ইলিয়াস (কবি), লুৎফুন নাহার লতা (লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব), মিথুন আহমেদ (সাংস্কৃতিক সংগঠক), মিনহাজ আহমেদ (লেখক এবং সংগঠক), ফাহিম রেজা নুর (লেখক ও কলামিস্ট), সেলিমা আশরাফ ইসলাম (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব), এ্যানি ফেরদৌস (সাংস্কৃতিক সংগঠক), ড. বিলকিস রহমান দোলা (আবৃত্তিকার), জি, এইচ আরজু (সংগঠক, বাচিক শিল্পী), দস্তগীর জাহাঙ্গীর (গণমাধ্যমকর্মী ও লেখক), জাকারিয়া চৌধুরী (সংগঠক), সিসিলিয়া মোরাল (সাংস্কৃতিক কর্মী), সাবিনা নীরু (বাচিক শিল্পী), তাহরিনা পারভীন প্রীতি (বাচিক শিল্পী), অ্যাডভোকেট আসলাম আহমেদ খান এবং গোপাল স্যানাল (অ্যাকটিভিস্ট)।
বিবৃতিতে আরও যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন, ‘গোপন সাহা (বাচিক শিল্পী), আবু সাঈদ রতন (লেখক, সংগঠক), ফারহানা ইলিয়াস তুলি (কবি), স্বাধীন মজুমদার (বাচিক শিল্পী), খালেদ সরফুদ্দিন (লেখক, সংগঠক), মনজুর কাদের (ছড়াকার), রওশন আরা নীপা (সংগঠক, চলচ্চিত্র নির্মাতা), মিল্টন আহমেদ (নাট্যশিল্পী, সংগঠক), মিশুক সেলিম (লেখক, সংগঠক), আনোয়ার সেলিম (কবি, নাট্যশিল্পী), পারভিন সুলতানা (আবৃত্তিকার), স্মৃতি ভদ্র (লেখক), জয়তূর্য চৌধুরী (অ্যাক্টিভিস্ট), ঝর্ণা চৌধুরী (অ্যাক্টিভিস্ট), স্বিকৃতি বড়ুয়া (অ্যাক্টিভিস্ট ও সংগঠক) এবং পঙ্কজ তালুকদার (সংগঠক)।