বেশি গরম খাবার খেলে অথবা চা-কফিতে চুমুক দিলে জিহ্বা পুড়ে যেতে পারে। গরম খাবারে জিহ্বা, ঠোঁট এবং মুখের তালু পুড়ে যাওয়া খুবই সাধারণ একটা বিষয়।
মুখের ভেতরে যে শ্লেষ্মা ঝিল্লি থাকে তা শরীরের অন্যান্য স্থানের ত্বকের তুলনায় অনেক বেশ সূক্ষ্ম, তাই অল্পতেই পুড়ে যায়। জেনে নিন জিহ্বা বা মুখের ভেতরের ত্বক পুড়ে গেলে করণীয় কী।
জিহ্বাকে দ্রুত শীতল করুন: জিহ্বা পুড়ে গেলে প্রথমেই এটাকে শীতল করার চেষ্টা করা উচিত। যত দ্রুত সম্ভর ঠান্ডা পানি মুখের ভেতরে কিছুটা সময় রেখে দিতে হবে। চাইলে কুলি করে নিন ঠান্ডা পানি দিয়ে। এ ক্ষেত্রে বরফের টুকরা মুখের ভেতরে দিলে সেটি ক্ষতস্থানে আটকে গিয়ে আরো ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য চিনি ক্ষতস্থানে দেওয়া যেতে পারে, এতে করে ব্যথা কমে যায়।
ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন: জিহ্বা পুড়ে গেলে এটাকে উক্ত্যক্ত করতে পারে এমন খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন। এসময় ঝাল বা মসলা জাতীয় খাবার ও গরম পানীয় অবশ্যই পরিহার করা উচিত, অন্যথায় জিহ্বার অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। অ্যালকোহলও বর্জন করুন। এছাড়া অন্যান্য যেসব খাবার খেলে জিহ্বাতে জ্বালাপোড়া করে বা অস্বস্তি লাগে তাও বাদ দিন। চিপস জাতীয় কর্কশ খাবার খাওয়া যাবে না। নরম ও হালকা খাবার খেতে হবে।
জিহ্বা ব্রাশ করা থেকে বিরত থাকুন: যারা স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব বুঝেন তারা প্রতিদিন দাঁতের পাশাপাশি জিহ্বাও ব্রাশ করে থাকেন। দাঁতের চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি আপনাকে দিনে দুইবার জিহ্বা ব্রাশ করার পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু জিহ্বা পুড়ে গেলে এটা মানতে যাবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, পোড়া জিহ্বার ব্যথা ও সংবেদনশীলতা প্রতিরোধে এটা নিরাময়কালে জিহ্বা ব্রাশ করা উচিত নয়।
দুধ পান করুন: দুধ পান করলে অথবা দুগ্ধজাত খাবার খেলে পোড়া জিহ্বায় আরাম পেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ পোড়া জিহ্বায় প্রলেপ দিতে পারে ও শীতল করতে পারে। এই উপকারিতা পেতে দইও খেতে পারেন।
লবণ-পানি দিয়ে কুলি করুন: প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার লবণ-পানি দিয়ে কুলি করতে পারেন। লবণ-পানি দিয়ে কুলি করলে তা অ্যান্টিসেফটিকের কাজ করে এবং ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। পুড়ে যাওয়া জিহ্বাকে প্রশান্তি দিতে খাবার খাওয়ার পর ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে লবণ-পানি দিয়ে কুলি করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে ১/২ চা চামচ লবণ মিশিয়ে লবণ-পানি তৈরি করতে পারেন। এছাড়া জিহ্বার পোড়া স্থান আঙুল দিয়ে স্পর্শ করা যাবে না, কেননা এর ফলে তা আরো অস্বস্তি সৃষ্টি করবে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটাবে।
ব্যথার ওষুধ খান (যদি প্রয়োজন বোধ করেন): সাধারণত গরম খাবারে জিহ্বা পুড়লে ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যদি আপনি অনেক ব্যথা অনুভব করেন তাহলে ব্যথার ওষুধ খেতে পারেন। আমরা সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই যেসব ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করি তা ব্যবহার করলেই চলবে, যেমন- আইবুপ্রোফেন অথবা অ্যাসিটামিনোফেন/প্যারাসিটামল। এক সপ্তাহ পরও সেরে ওঠার লক্ষণ না দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বিবেচনা করুন।