ডাক্তার পদবির অপব্যবহার বন্ধে হাইকোর্টে করা রিটের দ্রুত নিষ্পত্তি চায় চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। এ পর্যন্ত রিটটির শুনানি ৬৯ বার পেছানো হয়েছে। যা ডাক্তারদের ক্ষতি করছে বলে মনে করে সংগঠনটি।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এনডিএফ সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বেশ কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করছে দাবি করে সংগঠনটি বলছে, এনডিএফ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, এর মাধ্যমে তারা প্রতারণামূলক ভাবে জনগণের চিকিৎসা লাভের রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার প্রত্যাখ্যান করছে। তাদের শারীরিক, মানসিক, আর্থিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা দিতে পৃথিবী জুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কর্মে সহায়তা করার জন্য অ্যালাইড হেলথ প্রফেশন রয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফারিসহ নির্দিষ্ট কিছু জনশক্তি যারা নির্দিষ্ট কর্ম বাস্তবায়ন করে থাকেন। সবার উচিত তার নিজস্ব অবস্থানের স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন করা। বিএমডিসি আইন ২০১০ এবং বিশেষ করে ধারা ২৯ লঙ্ঘন করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, নার্স যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার- তাহলে তো পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বসে পড়বে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব অসৎ তৎপরতার মধ্যে অন্যতম ২০১৩ সালে হাইকোর্টে মামলা (রিট নং ২৭৩০/২০১৩) করে তা নিষ্পত্তি না করে এ পর্যন্ত ৬৮ বার কোনো শুনানি না করেই পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ ৫ নভেম্বর ৬৯তম বার এসে রিটটির শুনানি হয়, কিন্তু শুনানি অসমাপ্ত রেখে তা আবারও পেছানো হয়। এনডিএফ মনে করে এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
সংগঠনের নেতারা মনে করেন, ছাত্র জনতার ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ এখন রাষ্ট্রের সব সেক্টরকে নিয়মতান্ত্রিক আর সুশৃঙ্খল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমন সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনার অন্যতম কারণ এই অচিকিৎসকরা। রিট পেছানোর মধ্যে দিয়ে তাদের চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা দেওয়ার বৈধতা দেয়া হচ্ছে। যা কাম্য নয়।
অনতিবিলম্বে এ ধরনের বিদ্যমান আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী, মানুষের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতে বাধাদানকারী রিটের নিষ্পত্তির আহ্বান জানায় সংগঠনটি। এ সংক্রান্ত সব অপতৎপরতা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানানো হয় তাদের পক্ষ থেকে।