বর্তমান জীবন ব্যবস্থায় দুশ্চিন্তা একটি স্বাভাবিক বিষয়। সবার ক্ষেত্রেই কমবেশি এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে তখনই যখন মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভোগেন। এ জন্যই শরীরে দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা।
দুশ্চিন্তার কারণে মনের ওপর প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। খিটমিটে মেজাজ, অল্পতেই বিষণ্ন হওয়া, অল্পতেই রেগে যাওয়া, অভিমান, হতাশার মতো অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে শুধু দুশ্চিন্তার কারণে।
যেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে যেসব সমস্যা হতে পারে:
* দুশ্চিন্তা বাড়লে অনেকেই যা সামনে যা পান তাই খেতে শুরু করেন, অলস হয়ে শুয়ে কিংবা বসে থাকেন। কেউবা হয়ে পড়েন নেশাগ্রস্ত। ফলে বাড়ে ওজন। ওজন বাড়লে এর সঙ্গে সম্পর্কিত অসুখবিসুখের আশঙ্কাও বাড়ে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হাই কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ, গেঁটে বাত ইত্যাদি।
* মানসিক চাপের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের। অনিদ্রা ও খিটখিটে মেজাজেরও সম্পর্ক রয়েছে মানসিক চাপের সঙ্গে। এসবের ফলে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বাড়ে সংক্রমণের আশঙ্কা।
* দুশ্চিন্তার কারণে গ্যাস্ট্রিক, বদহজম বাড়ে।
* ঋতুস্রাব অনিয়মিত হওয়ার মূলেও রয়েছে এই দুশ্চিন্তাই।
দুশ্চিন্তা কমাতে যেসব নিয়ম মেনে চলবেন:
* নতুন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলোর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যান। ‘নিউ নর্মাল জীবন’কে মেনে নিন। যত তাড়াতাড়ি মানতে পারবেন, তত ভালো থাকবেন।
* মনের উপর চাপ পড়তে দেবেন না। সব সময় মন হালকা রাখার উপায় খুঁজে নিন। বই পড়া হোক কি গান শোনা, ঘরে বসে সিনেমা দেখা বা হালকা ব্যায়াম করা যেকোনো পথ বেছে নিন।
* সব সময় খবর, সিরিয়াস টক শো দেখবেন না। কমেডি শো, কার্টুন এসব দেখতে পারেন টিভিতে।
* ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও স্থুলতার সমস্যা থাকলে নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করুন।
* মন চাইলেই কিছু একটা খেয়ে ফেলবেন না। শরীর ও মন সুস্থ রাখতে খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। অতিরিক্ত লবণ, ভাজাভুজি, অতিরিক্ত মিষ্টি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
* ভালো ঘুম আপনার দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমিয়ে দেবে। কিন্তু দুশ্চিন্তা কাটাতে ঘন ঘন চা-কফি-কোল্ড ড্রিঙ্কস পান করবেন না। তাতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে।
* এসবের পরেও সমস্যা বাড়তে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে থেকে ওষুধ খেয়ে সমস্যা ডেকে আনবেন না।