গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৭৫ সালের পর দেশে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনের তুলনায় সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে।’
বৃহস্পতিবার (২ মে) আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানের সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক বক্তব্যের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারসহ সব অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছে এবং জনগণের মধ্য থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক শক্তি। তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনও মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল না বা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলও না।’
বিএনপির সমালোচনা করে বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি সবসময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। যে কারণে তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ভীতি রয়েছে এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় না। একবার তারা তাদের ক্ষমতায় আসার পথ নির্বিঘ্ন করতে অর্ধ কোটি ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল। আবার ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল। যারা জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য বিভিন্ন অপকৌশল গ্রহণ করেছিল তাদের মুখে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের কথা মানায় না।’
বিএনপির রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো যে কোনও উপায়ে ক্ষমতা দখল করা অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল এবং তা অবৈধভাবে ব্যবহার করে দুর্নীতি ও লুটপাট-তন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। বাংলাদেশের ললাটে পাঁচ পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক লেপন করেছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাদের অপশাসন-দুঃশাসনের ফলে দেশের জনগণকে দুঃসহ জীবনযাপন করতে হতো। আজ তারা শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছে। অথচ তারা ক্ষমতায় থাকতে কোনোদিন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ায়নি। বরং বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকের বুকে গুলি চালিয়ে হত্যা, সারের দাবিতে আন্দোলন করায় কৃষক হত্যা এবং বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় সাধারণ মানুষকে হত্যার মাধ্যমে বন্দুকের জোরে মানুষকে জিম্মি করে বাংলাদেশকে দুঃশাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট করেছিল বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি।
বিএনপি আদমজী জুট মিলসহ বিভিন্ন কল-কারখানা বন্ধ করে শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কয়েক ধাপে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে, চা-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়িয়েছে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষসহ সব মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য।’