ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই চাপে পড়ে গেল স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪০৯ রানের জবাবে দিন শেষে ৪ উইকেটে ১০৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে আরও ১০৪ রান করতে হবে টাইগারদের। আর সব মিলিয়ে এখনো ৩০৪ রানে পিছিয়ে মোমিনুল হকের দল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২২৩ রান করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এনক্রুমার বোনার ৭৪ ও উইকেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ দ্বিতীয় দিন নাভার্স নাইন্টিতে থামতে হয় বোনারকে। বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের ডেলিভারি ফ্লিক করে লেগ স্লিপে মোহাম্মদ মিঠুনকে ক্যাচ দেন বোনার। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৯০ রানে আউট হন তিনি। মিরাজের ৯৯তম টেস্ট শিকার হওয়ার আগে ২০৯ বলের ইনিংসে ৭টি চার মারেন বোনার। বোনার-সিলভা ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৮৮ রান যোগ করেন।
মিরাজের পরের ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সিলভা। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে আট নম্বরে নামা আলজারি জোসেফকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন সিলভা। দলের স্কোর সাড়ে তিনশও পার করেন তারা।
বোনারের মত নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যান সিলভাও। বোনারের মত হতাশায় পড়তে হয় তাকে। তাইজুলের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হন সিলভা। এই শিকারে মাধ্যমে দেশের মাটিতে শততম টেস্ট উইকেট নেন তাইজুল। ১৮৭ বলে ১০টি চারে ৯২ রান করেন সিলভা। সপ্তম উইকেটে দলের স্কোরে ১১৮ রান রাখেন সিলভা-জোসেফ।
দলীয় ৩৮৪ রানে সিলভার আউটের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪০৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ৮২ রান করা জোসেফ ও জোমেল ওয়ারিকানকে ২ রানে আউট করেন বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদ। আর শেষ ব্যাটসম্যান শ্যানন গাব্রিয়েলকে শিকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থামান তাইজুল।
বল হাতে বাংলাদেশের আবু জায়েদ ৯৮ রানে ও তাইজুল ১০৮ রানে ৪টি করে উইকেট নেন। এছাড়া মিরাজ-সৌম্য সরকার ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪০৯ রান যে, বড় চাপ ছিলো সেটি ব্যাট হাতে নেমে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলে খালি হাতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সৌম্য সরকার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার গাব্রিয়েলের শিকার হন তিনি।
প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে পরের বলে শান্তকে বিদায় দেন গাব্রিয়েল। তার বোলিং তোপে ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর অধিনায়ক মোমিনুল হককে নিয়ে দ্রুত রান তুলে পাল্টা আক্রমন চালান ওপেনার তামিম ইকবাল। পেসার জোসেফকে টানা তিন ওভারে তামিম চারটি ও মোমিনুল দু’টি চার মারেন। তামিম-মোমিনুল ব্যাটে চড়ে ঘুড়ে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ।
কিন্তু দুই সেট ব্যাটসম্যানকে দ্রুত তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে আবারো চাপে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪টি চারে ২১ রান করা মোমিনুলকে আউট করে ব্রেক-থ্রু দেন কর্নওয়াল। আর ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫২ বলে ৪৪ রান করে জোসেফের প্রথম শিকার হন তামিম।
৭১ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর দিনের বাকী সময়ে ভালোভাবে শেষ করেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। মুশফিক ২৭ ও মিঠুন ৬ রানে অপরাজিত আছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গাব্রিয়েল ২টি, কর্নওয়াল-জোসেফ ১টি করে উইকেট নেন। (বাসস)