দেশের বেসরকারিখাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৬ ক্যাটাগরিতে ১৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার দিচ্ছে সরকার। ২০১৯ সালের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেবে শিল্প মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ তথ্য জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রাম এবং নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাঙালি জাতির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা এনেছে। আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সুযোগ্য উত্তরাধিকার, বিশ্ব বরেণ্য নেতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিশ্ব দরবারে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পেতে যাচ্ছে। তাঁর বিচক্ষণ নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে সমৃদ্ধির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত দশ বছরে সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু মৌলিক এলাকায় বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের শিল্পায়ন অভিযাত্রা এক সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় তিনি পূর্ব পাকিস্তানে শিল্পায়নের ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে ‘পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র শিল্প করপোরেশন (ইপ্সিক)’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পর থেকে এটি বিসিক নামে সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া জোরদারে কাজ করে যাচ্ছে। বিসিকের প্রচেষ্টায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক হারে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেছে।
তিনি জানান, দেশে বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ক্ষুদ্র শিল্প এবং প্রায় সাড়ে ৮ লাখ কুটির শিল্প রয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি দেশে ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লাখ এসএমই প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। এসব এসএমই শিল্প প্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তা জিডিপিতে শতকরা ২৩ ভাগ এবং মোট শিল্প কর্মসংস্থানে শতকরা ৮০ ভাগ অবদান রাখছে। এছাড়া, দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং এখাত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিসিক, বিটাক এবং এসএমই ফাউন্ডেশন ভূমিকা রেখে চলেছে। যেসব শিল্প উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠান আগামীকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পুরস্কার গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, তাদের সাফল্যের পেছনেও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অসামান্য অবদান রয়েছে।