আজ ২৬ আগস্ট। ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস। ২০০৬ সালের এই দিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জীকে প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নামে ফুলবাড়ীর মানুষ। এ সময় তাদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণে প্রাণ হারায় তিন জন, আহত হয় দুই শতাধিক। এরপর থেকে প্রতিবছর দিনটিকে ‘ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ঘটনার ১৮ বছরেও পুরণ হয়নি ৬ দফা পূর্ণাঙ্গ চুক্তি। প্রত্যাহার করা হয়নি মামলা।
২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট পুলিশ ও বিডিআরের গুলিতে পঙ্গু হওয়া বাবলু রায়ের আক্ষেপ এখনও ৬ দফা চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি, বিচারের আওতায় আসেনি অপরাধীরা। তাই নতুন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আশার আলো জেগেছে তার মনে। একই স্বপ্ন দেখছেন সেদিন গুলিতে নিহত তরিকুলের বাবাও।
এদিকে, দীর্ঘ ১৮ বছর মিথ্যা মামলায় হয়রানি হচ্ছেন ফুলবাড়ীবাসী। আওয়ামী লীগ সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি, বরং নানামুখি ঝামেলায় ফেলেছেন স্থানীয়দেরকে। নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা অনেক। কোনভাবেই যাতে উন্মুক্ত খনি না হয় সেই দাবি স্থানীয়দের।
ঘটনার পর তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে যে ৬ দফা চুক্তি করেছিলেন তার অনেকগুলোই এখনও অপূর্ণ।
ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে করা ৬ দফা চুক্তি:
এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিষ্কার, উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও না করা, পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, গুলিবর্ষণসহ হতাহতের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন ও দোষীদের শাস্তি প্রদান, শহিদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি প্রদান, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার ও নতুন করে মামলা না করা।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মোশারফ হোসেন নান্নু জানান, এখনও চলছে অপতৎপরতা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৬ দফা চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।