আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো বিটিসিএল এর ওটিটি (ওভার দ্য টপ) কলিং সেবা ‘আলাপ’। আলাপ ইন্সটল করলেই একজন গ্রাহক নিজের বর্তমান মোবাইল নম্বরের সাথে মিলিয়ে একটি নতুন আলাপ নম্বরের মালিক হবেন। আলাপ থেকে আলাপ কথা বলা এবং চ্যাট করা যাবে বিনামূল্যে । তবে তার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। আলাপ থেকে যেকোন মোবাইল বা ল্যান্ডফোনে কথা বললে প্রতি মিনিটে খরচ হবে ৩০ পয়সা, রয়েছে প্রতি সেকেন্ড পালস সুবিধা (এরসঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হবে)। আবার যেকোন মোবাইল বা ল্যান্ডফোন নম্বর থেকেও আলাপে কল করা যাবে।
আজ রোববার (৪ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ঢাকায় ভার্চুয়ালী অ্যাপটির উদ্বোধন করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন. উদ্ভাবনই হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের প্রাণ।উদ্ভাবন ছাড়া কোনভাবেই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করা যাবে না। অতীতে তিনটি শিল্প বিপ্লবে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্ভাবনের মাধ্যমেই বিশ্বে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বহাল রেখেছে। আমাদের বড় সম্পদ হচ্ছে মানুষ। আমরা আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীর মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বের ৮০টি দেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করছি, আইওটিসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানি করছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বে দেওয়ার অবস্থানে নিজেদের দাঁড় করিয়েছি। তা অব্যাহত রাখতে হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং বিটিসিএল এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুর মতিন বক্তৃতা করেন।
জনগণের চাহিদা পুরণে ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগের অধীন সেবা প্রদান কারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণের তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেবা ধর্মী প্রতিষ্ঠান সমূহের শক্তির উৎস্য হচ্ছে জনগণ। জনগণকে তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবার মান দিয়ে সন্তষ্ট রাখতে পারলে সেই প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাবেই। মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের দেশ প্রেমের মহানব্রত নিয়ে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, উদ্ভাবন মানে মেধা ও সৃজনশীলতা। বর্তমানে শতকরা ৬০ ভাগ জনগোষ্ঠীর বয়স ৩০ বছরের নীচে ।
নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুদীর্ঘকাল বিটিসিএল যে স্থবিরতার মধ্যে কাটিয়েছে তা আর অব্যাহত নেই। এই লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে দেশে কম্পিউটার বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডট বাংলা ডোমেইন এর মূল্য হ্রাস, মাসে ১৫০ টাকায় ল্যান্ড ফোন থেকে ল্যান্ড ফোনে যত খুশী তত কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি, বিটিসিএল এর কলরেট হ্রাস, সাশ্রয়ী মুল্যে ইন্টারনেটসহ জিপন সার্ভিস প্রবর্তনে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করাসহ বেশ কিছু কর্মসূচির ফলে বিটিসিএল এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি খাতে তার সুদীর্ঘ ৩৪ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, জাতির পিতা ৭২ সাল থেকে ৭৫ সার পর্যন্ত সময়ে ডিজিটাল রূপান্তরের বীজ বপন করে গেছেন। পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘ একুশ বছরের আবর্জনার জঞ্জাল অপসারণ করে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে তথ্য প্রযুক্তি বিকাশে যুগান্তকারি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরে তিনি বাংলাদেশকে পৃথিবীতে এক অনন্য উচ্চতায় উপনীত করেছেন। করোনাকালে অফিস ,অদালত, শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প ও বাণিজ্য ডিজিটার প্রযুক্তির ওপর সম্পূর্ণ রূপে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে বলেন, এ্টাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিসিএলকে একটি আধুনিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরেন এবং সেবার মানোন্নয়ন ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে আলাপ এর লগো উন্মোচন করেন।