কুমারখালী-খোকসা উপজেলার পৌর বাজারে চায়না কারেন্ট জালে সয়লাব, হুমকির মুখে দেশীয় মাছ ধরার ফাঁদ তৈরি শিল্প।
মাছ ধরার ফাঁদ তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা থাকলেও নেই বেচা-কেনা।কারণ বাজার দখলে নিয়েছে চায়না কারেন্ট জাল, অবাধে চলছে পাইকারী ও খুচরা বেচা-কেনা।
বর্ষায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও খোকসার খাল-বিলে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ। পানি বাড়লেই মৎস্যজীবীদের তৎপরতা বাড়ে বহুগুন। তাই কদর বাড়ে মাছ ধরার বিভিন্ন ফাঁদ বা চারোর। কুষ্টিয়া অঞ্চলে মাছ ধরার ফাঁদ ‘চারো’ নামে পরিচিত।
জেলার কুমারখালী ও খোকসা উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিলে বর্ষায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছ, যেমন-কই, শিং, মাগুর, পুঁঠি, চাঁদা,খলসি,টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পরছে।
এ অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বর্ষায় খাল-বিল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার করে থাকে। মাছ ধরার সহজ কৌশল চলাচলের পথে পেতে রাখা হয় ফাঁদ।
তাই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন কেনা-বেচা হচ্ছে মাছ ধরার ফাঁদ। বাঁশ দিয়ে তৈরি, চারো, খৈলনি,বৃত্তিসহ মাছ ধরার বিভিন্ন ফাঁদ তৈরি এবং কেনা-বেচা হচ্ছে। কিন্তু সর্বনাশা চায়না কারেন্ট জালের প্রভাবে অনেকটাই মুখ থুবরে পরেছে দেশীয় মাছ ধরার ফাঁদ শিল্প,নেই আগের মত বেচা-কেনা।
অন্যদিকে অবৈধ্য কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে নিধন করা হচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ। ফলে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মৎস্যসম্পদ বিলুপ্তির আশঙ্কা করছে অনেকেই। অবৈধ এসব জাল দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা মা মাছ নিধন করলেও মৎস্য বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসনের নেই নজরদারি।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে তাঁরা কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরেন। এ ছাড়া এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে জেলেদের হাতে কারেন্ট বা মশারি জাল তুলে দিচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন নদী-নালা,খাল-বিলে অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহার করে প্রকাশ্যে মাছ শিকার করছেন তারা। সাধারণত এই ধরনের জালে দেশীয় প্রজাতির মাছ শিকার হয়ে থাকে। সরকার একদিকে বিশাল আয়োজনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করছেন আর অন্যদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা খাল-বিলে কারেন্ট জালের অবৈধভাবে ব্যবহার করে অবাধে মাছ শিকার করছেন। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ও উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ডিমওয়ালা ও ছোট পোনা মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী অকালে মারা যাওয়ায় জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, চায়না কারেন্ট জাল নিধনে আমরা অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি এবং সারা বছরই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারেন্ট জাল জব্দ, জেল-জরিমানার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।