বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়কের চার লেনের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য অধিগ্রহণ করা হচ্ছে মহাসড়কের পাশের জমিসহ ঘর-বাড়ী। এই চার লেনের কাজ চলাতে অধিক অর্থের লোভে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকায় অনেক জমির মালিক নিন্ম-মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাতা-রাতি বহুতল ভবন গড়ে তুলছে। সরকারি টাকা লোপাটের জন্যই এক শ্রেণীর দালালের মাধ্যমে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তবে নতুন ভবন নির্মান করা হলেও সরকারি অর্থ লোপাটের সুযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্প-২ সূত্রে জানা যায়, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলছে। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রকল্পটির কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। মহাসড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ মানচিত্রের মধ্যে কোনো ভূমিতে নতুন করে কোনো ধরনের ভবন, স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য প্রকল্প এলাকায় গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল এলাকায় নির্মাণাধীন চার লেন মহাসড়কটির পাশে বেশ কিছু এলাকায় দেখা যায়, গণ-বিজ্ঞপ্তির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চলছে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কাজ।
উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামের জলিল শেখ বলেন, লাভের আশায় তড়িঘড়ি করে এসব ভবন নিম্নমানের সামগ্রী দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে। যে কারণে এসব ভবনের সবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।
পাচিলা বাজার এলাকার খলিল মিয়া বলেন, ভূমির পাশাপাশি প্রতিটি ভবনের জন্য সরকারের মূল্য নির্ধারণ করা আছে। অনেক টাকা পাওয়ার আশায় আসলে এই ভবনগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এমনিতেই অধিক হারে ভুমি ও ভবনের জন্য ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে সরকার। এই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, গণ-বিজ্ঞপ্তি জারির পরও যদি কোনো জমির মালিক নতুন করে অসৎ উদ্দেশ্যে স্থাপনা নির্মাণ করে থাকেন, তবে তাঁর জন্য কোনো অতিরিক্ত অর্থ ছাড় দেওয়া হবে না।
সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্প পরিচালক ওয়ালিউর রহমান বলেন, প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অসৎ উদ্দেশ্যে নতুন স্থাপনা নির্মাণ করলেও সরকারি অর্থ লোপাটের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে প্রকল্প কর্তাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে বলেও জানান তিনি।