গাজীপুর জেলা কারাগারে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত ওমর ফারুক (৩৩) নামে এক কয়েদি গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে ওই কয়েদি আত্মহত্যা করেন বলে জানান কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের।
কয়েদি ওমর ফারুক গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার বিল জরাইল গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে আনা হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন গাজীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত ২৯ জানুয়ারি কয়েদি ওমর ফারুক গাজীপুর জেলা কারাগারের সার্জেন্ট ইন্সট্রাকটর মো. ফয়েজ উদ্দিনকে কেস টেবিলে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। পরে তার বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ সদর মেট্রো থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
জেল সুপার বলেন, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে দক্ষিণ পাশে ১নং সেলের গরাদের সঙ্গে কম্বল পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। কারাগারে কর্তব্যরত কর্মচারীরা ঘটনাটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেলের তালা খুলে তাকে ফাঁসমুক্ত করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্মাসিস্টকে খবর দেন। তার শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কয়েদি ওমর ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে।
এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কারা উপমহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার আল মামুন, কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার সর্বোত্তম দেওয়ান ও কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ ইব্রাহীম। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।