অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কাঁকড়া চাষ। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৬ সহ¯্রাধিক চাষী কাঁকড়া চাষে নিয়োজিত হয়েছে।
কাঁকড়া চাষীদের অনেকে জানান, অল্প জায়গায় কাঁকড়ার বেশি চাষ করা যায়। রোগ বালাই খুব কম, নেই বল্লেই চলে। কাকড়ার আকার ও ধরণ অনুযায়ী ৪শ থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়। তাছাড়া কাকড়া খুব দ্রুত বড় হয়। অল্পদিনে চাষ করে অধিক লাভবান হওয়ায় ঘের ব্যবসায়ীরা কাকড়া চাষে ঝুকে পড়ছে।
সাতক্ষীরা জেলা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোপাল চন্দ্র বলেন, প্রতি বছর সাতক্ষীরা থেকে প্রায় ৫ মেট্রিকটন কাকড়া রপ্তানিজাত করা হয়। এসব কাঁকড়া আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বড়ালে এর পরিমাণ আরও বাড়বে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সরদার জানান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে চিংড়ি ও ইলিশ মাছের পরই এখন কাঁকড়ার অবস্থান। সারাদেশ থেকে যে পরিমাণ কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি হয় তার মধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উৎপাদিত কাঁকড়ার পরই সাতক্ষীরার অবস্থান। বর্তমানে সাতক্ষীরায় চাষ হওয়া এসব কাঁকড়া আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিদেশীদের খাবার টেবিলের মেনুতে যেসব খাবার এখন স্থান পায় তার মধ্যে অন্যতম সুস্বাদু বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শিলা প্রজাতির কাঁকড়া।
তিনি আরও জানান, জেলায় প্রায় ৮৫-৯০ হেক্টর জমিতে কাঁকড়ার চাষ হয়। এর গড় উৎপাদন প্রতি বছর ৩ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর তিন হাজার দুইশ মেট্রিক টন কাকড়া উৎপাদন হয়েছিলো। চলতি বছর ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় ৪৫২টি কাঁকড়ার ঘের রয়েছে। এছাড়া ছোট-বড় সবমিলে প্রায় দুই হাজার সরকারি-বেসরকারি মোটাতাজাকরণ কাঁকড়ার খামার গড়ে উঠেছে। যা বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে।
নিউজ ডেস্ক / বিজয় টিভি