আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের সময় আটক নিরপরাধ কারাবন্দীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে বৈষম্যহীন কারা মুক্তি আন্দোলন। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, আন্দোলনের উপদেষ্টা ইসহাক খান, আজহারুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মুফতি শফিকুল ইসলাম বলেন, বন্দী সব আলেমদেরকে মুক্তি দিতে হবে। যাদের হাসিনা সরকার আয়নাঘরে বন্দী করে রেখেছে। তাদেরকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। যদি তাদেরকে মুক্তি না দেওয়া হয় তাহলে আমরা মনে করবো এখনো দেশে জুলুমের শাসন মুক্ত হয়নি।
তিনি বলেন, আগামী তিনদিনের মধ্যে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। আগামী সোমবার আইন উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবো। যতদিন পর্যন্ত আমরা কারাবন্দীদের মুক্ত করতে না পারবো, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
আইনজীবী সারোয়ার হোসেন বলেন, আজকের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। যে জালিম সরকার গত ১৫ বছর ধরে এ দেশ পরিচালনা করেছে, তারা মূলত ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। যেসব আলেম এখনো কারাগারে রয়েছে তাদেরকে তিন দিনের ভেতরে মুক্ত করতে হবে।
সমাবেশ থেকে ৬ দফা দাবি
১. আওয়ামী দুঃশাসনে আটককৃত সকল নিরপরাধ কারাবন্দীদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
২. আদালত কর্তৃক জামিন ও বিচারের ক্ষেত্রে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বন্দীদের ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে।
৩. আওয়ামী সরকার কর্তৃক সকল মিথ্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। বিশেষ করে ধার্মিক মুসলিমদের ওপর উদ্দেশ্যমূলকভাবে চাপিয়ে দেওয়া মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।
৪. কারাগারে সব বন্দীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক বন্দীকে মাসে অন্তত একবার হলেও তার জীবনসঙ্গিনীর সঙ্গে কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা সময় নিরাপত্তার সঙ্গে একাকীত্ব যাপনের সুযোগ করে দিতে হবে।
৫. ২০১৩ সালের হেফাজত ও ২০২৪ সালের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৬. কোনো ধরনের অপরাধীকে রাষ্ট্র কর্তৃক গুম অথবা ক্রসফায়ার দেওয়া যাবে না। বিগত দিনে যারা গুম ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে হবে। ইতোপূর্বে যাদের গুম করা হয়েছিল তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সকল গুমখানা বা আয়নাঘরগুলো খুঁজে বের করে প্রকাশ্যে ধ্বংস করতে হবে।