আমাদের পূর্বসূরিরা কখনোই হয়তো ভাবতে পারেননি, একদিন এই পৃথিবীতে বোতলে ভরে বিক্রি হবে বাতাস। কিন্তু শিল্পোন্নয়নের অজুহাতে এই গ্রহের বায়ুমণ্ডল আমরা এতটাই বিষাক্ত করে ফেলেছি, বোতলজাত নির্মল বাতাসও এখন এক অস্তিত্বশীল ব্যবসা।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একটি কোম্পানি অনলাইনে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে নির্মল ‘উপকূলীয় টাটকা বাতাস’ ভর্তি কাঁচের বোতল বিক্রি করে। প্রতি বোতল তারা বিক্রি করেছে ১০৫ ডলার (প্রায় ৯ হাজার টাকা) পর্যন্ত।
কোস্ট ক্যাপচার এয়ার নামে এক কোম্পানি আধুনিক যুগে বিশুদ্ধ বাতাসের গুরুত্বকে একটি স্মারক ও আলোচনার বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করতে বোতলবন্দি টাটকা বাতাসের বিক্রি শুরু করে। বিশ্বের দূষিত এলাকার মানুষ ব্যবহারিক উদ্দেশ্যেই কিনতে শুরু করে বোতলগুলো।
ক্রেতারা কোম্পানিকে জানিয়েছেন, বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিহত করতে এই ‘পণ্য’ সাহায্য করেছে, তাই তারা যেন এটি বিক্রি অব্যাহত রাখে এবং বোতলে যেন একটি প্রাইস ট্যাগ সংযুক্ত করে।
যদিও একটি খালি কাঁচের বোতলের গায়ে ৭৫ পাউন্ড (১০৫ ডলার) প্রাইস ট্যাগ দেখলে বিস্ময় না জাগার কোনো কারণ নেই।
সত্যি বলতে, কোস্ট ক্যাপচার এয়ার বিশ্বের একমাত্র কোম্পানি নয়- যারা বাতাস বিক্রি করে। ভিটালিটি এয়ারের মতো বাতাস বিক্রির বড় ব্র্যান্ডও রয়েছে এই জগতে, যারা কানাডিয়ান রকি মাউন্টেন, এয়ার ডি মন্টকুক কিংবা ফরাসি গ্রামাঞ্চল থেকে বাতাস সংগ্রহ করে বিক্রি করে।
বাতাসে ভরা ৭০০ মিলিলিটার বোতলের জন্য ১০০ ডলারের বেশি খরচ করা অযৌক্তিক মনে হতে পারে; অথচ এত ব্যয়বহুল হবার পরেও মানুষ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি- বোতলের বাতাসও আসলে নির্ভেজাল কি না। যদিও শুধু উপকূলীয় বাতাস সংগ্রহ করতেই তাদের কর্মীরা বহু দূরের পথ পাড়ি দেন বলে দাবি কোস্ট ক্যাপচার এয়ারের।
এ কোম্পানির ১০৫ ডলার প্রতি বোতল এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ব্যয়বহুল বোতলজাত বাতাস। দামের জায়গায় প্রথম স্থানে আছে সুইজারল্যান্ডের জেনুইন মাউন্টেন এয়ার, যারা আল্পসের একটি গোপন স্থান থেকে সংগৃহীত সুইস পর্বতের বাতাস প্রতি বোতল বিক্রি করে ১৬৭ ডলারে (প্রায় ১৪ হাজার ৩০০ টাকা)।