নরসিংদীর হাজীপুরে ধাতব যন্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে মাথা থেঁতলে দিয়ে ও পেট কেটে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। নিহত ওই গৃহবধূর নাম সুবর্ণা আক্তার (২১)।
নিহত সুবর্ণা আক্তার নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. সোহেল মিয়ার স্ত্রী। সোহেল স্থানীয় একটি মরিচ-হলুদ ভাঙানোর কারখানায় কাজ করতেন। সুবর্ণা-সোহেল দম্পতির ৬ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সোহেল ও সুবর্ণা দুজনেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উত্তেজিত সোহেল ঘরে থাকা একটি রেঞ্জ (ধাতব যন্ত্র) নিয়ে সুবর্ণার ওপর চড়াও হন। এ সময় ওই রেঞ্জ দিয়ে সুবর্ণার নাক-মুখ-মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে সোহেল। এতে তার মুখমণ্ডল থেঁতলে যায়। ওই সময় সুবর্ণা বাধা দিলে ওই রেঞ্জ তার পেটে ঢুকিয়ে দেন সোহেল। এতে তার নাড়িভূড়ি বেরিয়ে যায়। এ সময় ৬ মাস বয়সী শিশুটি তাদের পাশেই ঘুমিয়ে ছিল।
ওই সময় সুবর্ণার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে নরসিংদী মডেল থানায় খবর দেন। পরে রাত ২টার দিকে সদর থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় গুরুতর আহত অবস্থায় সুবর্ণাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল। এর মধ্যেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরে আজ সকালে তার লাশ ওই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে নিহত গৃহবধূর বাবা রফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, আমার মেয়ের জামাই সোহেল প্রায়ই নেশা করত। অভাবের সংসারে এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। তবে গত রাতে কী নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে, ঠিক জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়েকে তার জামাই সোহেলই রেঞ্জ দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে নাক-মুখ-মাথা থেঁতলে দিয়েছে এবং তার পেটে রেঞ্জ ঢুকিয়ে দিয়ে হত্যা করেছে। আমি তার বিচার চাই।
নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আমরা আটক করেছি। তিনি আমাদের কাছে পুরো ঘটনা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।