কৃষক টাবুল বর্মনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরকীয়ার সম্পর্ক ললিতা রানীর। একপর্যায়ে ললিতা পরকীয়ার সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসছে চাইলে সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন টাবুল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে টাবুলের ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ললিতা। এরপর টাবুলকে হত্যার জন্য ৩০ হাজার টাকার খুনি ভাড়া করেন ললিতা। এরমধ্যে ১৮ হাজার টাকা পেয়ে টাবুলকে কুপিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেন খুনিরা।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা।
তিনি জানান, গত ৩১ জানুয়ারি মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাঘুমটি গ্রামের মৃত ভগিরাম বর্মনের ছেলে টাবুল বর্মন নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় টাবুলের ছোট ভাই গোবিন্দ চন্দ্র বর্মন গত ১ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় সদর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও বিভিন্ন উৎস থেকে ভিকটিমের সর্বশেষ অবস্থান হাড়িভাসা এলাকায় পাওয়া যায়। এবং ভিকটিমের সঙ্গে প্রতিবেশী (পরকীয়া প্রেমিকা) মন্টু বর্মনের স্ত্রী ললিতা বর্মন ও তার মেয়ে মনিকা রানী বর্মন এবং হাড়িভাসা এলাকার তুলেন চন্দ্রের ছেলে জামাই প্রভাত চন্দ্র রায়ের মোবাইল নম্বরের সংশ্লিষ্ঠতা থাকায় তাদেরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরই মধ্যে ভিকটিম টাবুলের নিখোঁজের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় পুলিশ।
তিনি আরো জানান, টাবুলে সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী ললিতার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে ললিতাকে গোপন একটি মোবাইল ও সীম কিনে দেয় এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। কিন্তু সম্মানের দিকে তাকিয়ে ললিতা এই অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে না চাইলেও টাবুল সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে ললিতা ক্ষুব্ধ হয়ে তার ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। টাবুলকে হত্যার জন্য ৩০ হাজার টাকার পরিচিত রফিকুল ইসলাম ও মোন্তাজের চুক্তি করেন ললিতা।
পরবর্তীতে ললিতা বর্মন ৩ দফায় মোন্তাজ ও রফিকুল ইসলামকে ১৮ হাজার টাকা দেন। ঘটনার দিন (৩১ জানুয়ারি) পরিকল্পনা অনুসারে ললিতা ভিকটিমকে ফোনে হাড়িভাসা জয়গুন মার্কেট এলাকায় ডেকে নেন। পরে জামাতা প্রভাসের মোটরসাইকেলে করে চাকলারহাট ডোলোপাড়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে মোন্তাজ ও রফিকুলের মাধ্যমে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেন টাবলুকে। গ্রেফতারের পর ললিতার দেওয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল থেকে মাটি খুঁড়ে টাবুলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত কুড়ালটি জব্দ করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসএম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিরুল্লাহ, ডিবির ওসি মোজাফফর হোসেন, সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায়, বোদা থানার ওসি মোজাম্মেল হকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।