দুরন্ত এক কিশোর। থাকে গ্রামে। সারাক্ষণ খেলা আর বন্ধুদের নিয়ে মেতে থাকে। বন্ধুদের হয়ে কখনো প্রতিবাদ করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে মারামারিতে। বাবার কাছে নানা অভিযোগ আসতে থাকে। কিন্তু কিশোর অন্যায়কে মেনে নেয় না। অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়েই একসময় কিশোর মুজিব জড়িয়ে যান রাজনীতিতে। অংশ নেন ভাষা আন্দোলনে। যুক্ত হন রাজনীতিতে। গণ–অভ্যুত্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধের ডাক—ইতিহাসের সেই সত্য ঘটনা উঠে এসেছে সিনেমায়। রাজনীতির বাইরের বঙ্গবন্ধুও আছেন সিনেমায়। পর্দায় দেখা যাবে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা অজানা গল্প।
গতকাল বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে ছবিটির প্রিমিয়ার হয়। সেখানে সিনেমাটি দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছিলেন ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
‘“মুজিব: একটি জাতির রূপকার” শুধুই একটি সিনেমা নয়। এটি সাধারণ এক কিশোরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠার গল্প।’ ১০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে সিনেমাটি নিয়ে এভাবেই বলছিলেন আরিফিন শুভ, ফজলুর রহমান বাবু, চঞ্চল চৌধুরীরা। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাঁরা। সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। সিনেমাটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনোদনের জায়গা থেকে আমরা যেভাবে সিনেমাকে চিন্তা করি, সেই ভাবনা থেকে একটু সরে এসে সিনেমাটিকে দেখতে হবে। আরও বড় কিছু চিন্তা করলে ভালো হয়। কারণ, এই সিনেমা বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্মযজ্ঞ, তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা উঠে এসেছে।’
সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। তিনি বলেন, ‘এই সিনেমায় আমাকে যদি পাসিং শট দিতে বলতেন, তবু রাজি হতাম। যদি শুটিংয়ের প্রোডাকশন বয় বা লাইটম্যান হওয়ার সুযোগ পেতাম, তাহলেও একজন অভিনেতা হিসেবে গর্বিত হতাম।’
সিনেমায় খন্দকার মোশতাক আহমদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু। তিনি বলেন, ‘বায়োপিকে অভিনয় করা কঠিন কাজ। অনেক কিছু জেনেছি, অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে। এটা আমার কাছে গর্বের ব্যাপার।’
ছবিতে কিশোর শেখ মুজিব চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্য জ্যোতি। এ ছাড়া রেণু (শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনা চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, শেখ রেহানা চরিত্রে সাবিলা নূর, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ, তাজউদ্দীন আহমদ চরিত্রে রিয়াজ, এ কে ফজলুল হক চরিত্রে শহীদুল আলম সাচ্চুসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন।
বাংলাদেশের এত তারকাকে একসঙ্গে আগে কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি। সিনেমাটিতে ১৫ জনের বেশি জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনয়শিল্পী রয়েছেন। শুরুতে বেশ কয়েকবার অডিশন দিয়েও সিনেমাটিতে সুযোগ পাবেন কি না, জানতেন না আরিফিন শুভ। এক মাস পর হঠাৎ একদিন জানতে পারেন, তাঁর কাঁধেই প্রধান চরিত্রের দায়িত্ব বর্তাচ্ছে। শুটিং ছিল শুভর জন্য আরও কঠিন। এই সিনেমার জন্য মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন অভিনেতা।