1. junayed@bijoy.tv : বিজয় নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  2. boe01@bijoy.tv : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  3. rafi@bijoy.tv : বিজয় নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  4. rubel@bijoy.tv : support_admin :
'পিতার জন্য নিষ্পাপ মেয়ের আবদার ফেলতে পারিনি' - বিজয় টিভি
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন

‘পিতার জন্য নিষ্পাপ মেয়ের আবদার ফেলতে পারিনি’

বিজয় টিভি নিউজ
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ২১৫ বার পড়া হয়েছে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরি জীবনের মজার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারি পুলিশ সুপার কাজী ওয়াজেদ আলী।

সোমবার বিকেলে নিজের আইডি’তে শেয়ার করা স্মৃতিচারণে তিনি ১৯৯৮ সালে জামালপুরে চাকরি করা সময়ের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। স্মৃতিচারণে তিনি পিতার প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি তুলে ধরেন।

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন- রাত্র ন’টার দিকে চৌকিদার এসে থানার সেকেন্ড অফিসারকে বলল, স্যার একটা জুয়া খেলার সংবাদ আছে। জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানা এলাকায় ১৯৯৮ সনের দিকে অপরাধ বলতে তখন জুয়া খেলা এবং গরু চুরিই ছিল অন্যতম। এলাকার অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য পেতে তখন চৌকিদার এবং দফাদারদের উপরেই নির্ভর করতে হতো। তাই তাকে নিরাশ না করে বললাম, চলো।

দু’জন পোশাকধারী কনস্টেবলসহ চৌকিদারকে নিয়ে হাতে টর্চ লাইটসহ থানা থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে‌র গ্রামের মধ্যে বিশাল মাঠের মাঝে গন্তব্যস্থল। দুপাশে কর্দমাক্ত মাঠে সদ্য লাগানো ইরি ক্ষেতের পাশ দিয়ে সরু আইলের উপর হাঁটছি।

দূরে হালকা কুপি বাতির আলো দেখা গেল। কাছাকাছি পৌঁছে দেখলাম শ্যালো মেশিনের একটি ঘর, পাঠখড়ি দিয়ে হালকা বেড়া দেওয়া। কাছাকাছি পৌঁছে পাঠখড়ির বেড়া ভেদ করে ভিতরে দৃষ্টি দিতেই দেখলাম, খালি গায়ে লুঙ্গি পরা তিন ব্যক্তি গোল হয়ে বসে তাস খেলছে।

ভিতরে ঢুকতেই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বেড়া ভেঙে তিনজন দৌঁড়ে মাঠে কাদা পানির মধ্যে পড়ল। টর্চ মেরে দেখলাম ৫-৬ হাত দূরে গিয়ে তিনজনেই কাদার মধ্যে শুয়ে পড়ল। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো স্লিপ করে পড়ে গিয়েছে। কিন্তু যখন দেখলাম নিজেরাই গড়াগড়ি করে গায়ে কাদা মাখছে তখন ভুল ভাঙলো। সাথে সাথে আমার কনস্টেবলরা ওদের ধরার জন্য খুব দ্রুতবেগে জুতো খুলে কাদা পানিতে নেমে পড়ল।

আমি ইচ্ছে করেই না নেমে ভাবলাম, আগে একটু দেখি আমার পালোয়ানরা কি করে! টর্চের আলো ধরে রাখলাম ওদের দিকে। চৌকিদার এবং কনস্টেবলরা যখনই ওদের ধরতে গেল দেখলাম ওদের হাত পিছলে লোকগুলো বেরিয়ে যাচ্ছে। এভাবে প্রায় ১/২ মিনিট চেষ্টা করে একজনার লুঙ্গি ধরে ফেলল। এবার সে নিজে ইচ্ছে করেই লুঙ্গিও খুলে ফেলল। শরীরে ওদের এতটাই কাদা যে কনস্টেবল এবং চৌকিদার ওদের শরীরের যে অংশই ধরে সাথে সাথে ওরা কারিকুরি করে পিছলে বের হয়ে আবার দৌঁড় দেয়। ততক্ষণে বুঝলাম ইচ্ছে করে কাদামাখা ছিল ওদের পালিয়ে যাওয়ার টেকনিক। ওদের এসব দেখে হাসতে হাসতে আমি আইলের উপর বসে পড়লাম। ওদের চিৎকার চেঁচামেচিতে ইতোমধ্যে গ্রামবাসী বিষয়টি টের পেল।

এভাবে ধস্তাধস্তির প্রায় দুই তিন মিনিটের চেষ্টায় দুই কনস্টেবল এবং এক চৌকিদার মিলে জন্মকালীন ড্রেস পরা অবস্থায় একজনকে ধরতে সক্ষম হলো! বাকি দুজন দিগম্বর অবস্থায় পালিয়ে গেল। কনস্টেবল, চৌকিদার এবং ধৃত ব্যক্তি সবার শরীরে এতটাই কাদা মাখামাখি হয়ে গেল যে কাউকে ঠিকমতো চেনাও যাচ্ছিল না। ওদের দেখে আমি হাসি থামাতে পারছিলাম না।

লুঙ্গি পরিয়ে ধৃত ব্যক্তিকে সহ এবার শ্যালো মেশিন ঘর তল্লাশি করলাম। দেখলাম সেখানে বাইশটা এক টাকার নোট অর্থাৎ মোট ২২ টাকা এবং কিছু তাস পেলাম। চৌকিদারের তথ্যে এত বড় জুয়া খেলোয়াড় ধরেছি ভেবে আবারো হাসলাম।

ধৃত ব্যক্তিকে নিয়ে আইল বেয়ে মেইন রোডের দিকে যেতেই দুজন নারীর কান্নার বিলাপ শুনতে পেলাম। ওরা আমাদের দিকে এগিয়ে গগন বিদারী শব্দে কাঁদতে থাকলো। ছোট্ট একটা মেয়ে নিয়ে আমাদের সামনে এসে মহিলা বলল, স্যার ও আমার স্বামী। ‌ও খুব ভালো মানুষ, একটু তামোক খায় আর মাঝে মাঝে একটু জুয়া খেলে, ওকে দয়া করে ছেড়ে দেন। ছোট্ট মেয়েটি কাদামাখা ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরল।

দৃশ্যটি দেখে মুহূর্তেই আমার হাসি মাখা মুখখানা কালো হয়ে গেল। লঘু পাপী স্বামীর জন্য স্ত্রী আর সন্তানের ভালোবাসা দেখে বিস্মিত হলাম। মনে হলো জগতে এমন লঘু পাপের লোকের সংখ্যার অভাব নেই। কিন্তু এমন অকৃত্রিম ভালোবাসার লোকের বড়ই অভাব। ভাবলাম এমন ছোট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনলে জগতের যতটুকু না ভালো হবে, তার চেয়ে ঢেরগুন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সামনে দাঁড়ানো দুটি আত্মা।

আইনের মার প্যাচে না গিয়ে এই দুটি হৃদয়ের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য খুব ইচ্ছা হল। ওদের প্রতি খুব মায়া হল। বললাম আর যেন কখনো জুয়া না খেলে। অন্তত এই ছোট্ট নিষ্পাপ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে হলেও যেন ও জুয়া খেলা বন্ধ করে। মেয়েটি তার বাবাকে নিয়ে হাসিমুখে চলে যাওয়ার দৃশ্যটি বেশ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম! চাকুরী জীবনের অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে মাঝে মধ্যেই ওদের চলে যাওয়ার দৃশ্যটি আমার চোখে ভাসে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
ভিড়ের মাঝে শুভশ্রীকে আগলে ধরলেন দেব

ভিড়ের মাঝে শুভশ্রীকে আগলে ধরলেন দেব

বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত অন্তত ১০০

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত অন্তত ১০০

বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো

১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫
হজ ও ওমরাহ নিয়ে বিশাল সুখবর!

হজ ও ওমরাহ নিয়ে বিশাল সুখবর!

শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫

সাম্প্রতিক পোস্ট

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
© সর্বসত্ব সংরক্ষিত ২০২৫ বিজয় টিভি || All Rights Reserved.