যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে আরও কমবে যমুনার পানি। দু-একদিনের মধ্যেই নেমে আসবে বিপদসীমার নিচে।
যমুনার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও চলনবিলের পানিও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। জেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় লাখো মানুষ। তলিয়ে গেছে প্রায় ৭ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমির ফসল।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য জেলা শহর ও পাঁচটি উপজেলায় ৭২১ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে সাত লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নদী ভাঙন ও নিম্নাঞ্চল এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হলেও অ-বিতরণ কৃত রয়ে গেছে এর বেশির ভাগ অংশই।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার আব্দুল লতিফ পানি কমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে গত ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠায় বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। অনেকেই বাড়ি ঘর ছেড়ে উঁচু রাস্তা এবং স্কুল-মাদরাসার মাঠে খোলা আকাশের নিচে থাকছে। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় যমুনায় পানি কমা। যমুনায় দুদিনের ব্যাবধানে কমলো ৩০ সেন্টিমিটার পানি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। তবে গত ৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার কমে ও গত ২৪ ঘন্টায় কমেছে আরও ২২ সেন্টিমিটার।
তিনি আরও বলেন, বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি এই মুহূর্তে আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই। দু-একদিনের মধ্যেই যমুনার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সদর ও শাহজাদপুরের কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিতরণ শুরু করেছেন। এ ছাড়া জেলায় ৭২১ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। আমরা নিয়মিত বন্যাদুর্গতদের খোঁজ-খবর রাখছি। এছাড়াও বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে।