ফরিদপুরে নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের একটি গ্রামে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর আপত্তিকর ছবি তুলে রেখে ধর্ষণের অপরাধে সৎ বাবাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। অনাদায়ে তাকে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর একটার দিকে এ রায় দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান।
সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম হারুন অর রশিদ ওরফে মাসুদ রানা (৪৪)।রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক নারীর (৩১) সঙ্গে বিয়ে হয় হারুনের। ওই নারী আগের সংসারের তিনজন মেয়েকে নিয়ে দ্বিতীয় স্বামী হারুনের সঙ্গে বসবাস করতেন। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি রাত তিনটার দিকে চুপিসারে স্ত্রীর পাশ থেকে উঠে অন্য ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তিনজনের মধ্যে সবার বড় সৎ মেয়েকে (১২) ডেকে তোলেন হারুন। পরে তার আপত্তিকর ছবি তুলে রেখে ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন।
পরদিন সকালে বাড়ির পাশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শিশুটিকে ঢাকার একটি বাসায় নিয়ে যান হারুন। সেখানে আবারও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে এলে সে তার মাকে সব ঘটনা খুলে বলে। ওইদিনই (৩০ জানুয়ারি) শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নগরকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল হারুনকে একমাত্র অপরাধী হিসেবে দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন নগরকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম মন্ডল।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই আদালতের পিপি স্বপন পাল বলেন, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায়ের ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে এবং দেশে আইনের শাসনের পথ সুগম হবে।