ময়মনসিংহের তারাকান্দায় আব্দুস সামাদ নামে এক অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধারের ৮ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত দুই ভাইসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (০৬ জুলাই) সকালে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার দাদরা এলাকার আলাল উদ্দিনের ছেলে রবিন মিয়া (১৯), তার বড় ভাই রোহান মিয়া (২৪), ওই উপজেলার হাটপাড়া গ্রামের মো. মুস্তাফিজুর রহমান নাঈম (১৯), পুঙ্গুয়াই গ্রামের মো. শাহীনুুুর ইসলাম (২২)।
ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত রবিন মিয়া নিহত অটোরিকশা চালক সামাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেই সম্পর্কের সুবাদে সামাদ প্রায়ই রবিনের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। এতে এক সময় রবিনের ছোট বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সামাদের। বিষয়টি জানতে পেরে সামাদকে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় রবিন। এরপরই সামাদকে হত্যার পরিকল্পনা করে রবিন ও তার ভাই রোহান।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে সামাদের অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘোরাফেরা করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নিয়ে যায় রবিন, রোহান ও নাঈম। সেখানে ঝোপের আড়ালে আগেই ওৎ পেতে ছিল শাহীনসহ আরও দুইজন। সামাদকে সেখানে নেওয়ার পর প্লাস্টিকের রশি ও জালের টুকরা গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে রাখে আসামিরা।
মঙ্গলবার সকালে স্কুলের পাশে অটোরিকশা দেখে আশপাশে সামাদকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সেপটিক ট্যাংকে পা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনার পরের দিন নিহত সামাদের বাবা শাহজাহান মিয়া অজ্ঞাত আসামি করে তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপরই পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে জেলা ডিবি পুলিশ। অভিযানে ৮ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে। বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।